AB Bank
ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

রিজার্ভের অর্থে 'সার্বভৌম‌‍ সম্পদ' নামে রাষ্ট্রীয় বিনিয়োগ তহবিল


Ekushey Sangbad

০৪:০৭ পিএম, জানুয়ারি ৩১, ২০১৭
রিজার্ভের অর্থে 'সার্বভৌম‌‍ সম্পদ' নামে রাষ্ট্রীয় বিনিয়োগ তহবিল

একুশে সংবাদ : রিজার্ভের অর্থ দিয়ে সার্বভৌম সম্পদ তহবিল নামে রাষ্ট্রীয় বিনিয়োগ তহবিল গঠন করতে যাচ্ছে সরকার। মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নে বৈদেশিক মুদ্রার চাহিদা পূরণে এ তহবিলের অর্থ খরচ করবে সরকার। বিদেশী সংস্থার ঋণনির্ভরতা কমাতে সরকার এ তহবিল গঠন করতে চায়। উন্নয়নকাজের ব্যয় মেটাতে অভ্যন্তরীণ সক্ষমতা অর্জনই এ তহবিল গঠনের মুখ্য উদ্দেশ্য। তহবিলের জন্য অর্থ নিলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর কোন চাপ সৃষ্টি হবে কিনা- জানতে চেয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে গত সপ্তাহে এ বিষয়ে মতামত চেয়ে চিঠি পাঠায় অর্থ মন্ত্রণালয়। রবিবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে অপর এক চিঠিতে মতামত দিয়েছে ফরেন রিজার্ভ এ্যান্ড ট্রেজারি ম্যানেজমেন্ট বিভাগ। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা বলেন, এ ধরনের তহবিল গঠনের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে গঠিত কমিটি সরকারকে যে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে, ওই প্রতিবেদনের সুপারিশের ওপর বাংলাদেশ ব্যাংকের মতামত চেয়ে চিঠি দেয়া হয়। তিনি বলেন, এ সংক্রান্ত তহবিল গঠনের সম্ভাব্যতা নিয়ে একটি কমিটি দীর্ঘদিন কাজ করেছে। ওই কমিটির প্রতিবেদন পর্যালোচনা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক তাদের মতামতে বলেছে, সরকারের মেগা প্রকল্পে বা পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) প্রকল্প বাস্তবায়নে এ তহবিল থেকে অর্থায়ন করা যেতে পারে। তবে পিপিপি প্রকল্পের ভিজিএফ (ভায়াবিলিটি গ্যাপ ফাইন্যান্সিং) অর্থায়নে এ তহবিল ব্যবহার করা যাবে না। তহবিলের অর্থায়নে প্রকল্প নির্বাচনের ক্ষেত্রে অবশ্যই প্রকল্পের মেয়াদ যাতে দীর্ঘ হয় এবং পুরো সময়ে নিরবচ্ছিন্নভাবে মুনাফা পাওয়া যায় তা নিশ্চিত করতে হবে। সরকারের সার্বভৌম সম্পদ তহবিল গঠন ইতিবাচক বলে মন্তব্য করে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গবর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ বলেন, বৈদেশিক মুদ্রার বড় রিজার্ভের অনেকটাই অলস পড়ে থাকে। ৪-৫ মাসের আমদানি খরচ মেটানোর অর্থ রেখে সরকার চাইলে বাকিটা উন্নয়নকাজে খরচ করতে পারে। তিনি বলেন, রিজার্ভের অর্থ কোনভাবেই যাতে অপচয় না হয়, তা দেখেই প্রকল্প নির্বাচন করতে হবে। এজন্য এমন প্রকল্প নির্বাচন করতে হবে যার সুশাসন সর্বোচ্চ মাত্রায় নিশ্চিত হবে, দীর্ঘমেয়াদী হবে এবং নিশ্চিতভাবেই মুনাফা আসবে। মোট কথা তহবিলের অর্থ ফেরত পাওয়াটা যে কোনভাবেই হোক নিশ্চিত করতে হবে। জানা গেছে, পদ্মা সেতুর অর্থায়ন থেকে বিশ্বব্যাংকের সরে দাঁড়ানোর পরই সরকার নিজস্ব অর্থায়নে প্রকল্প বাস্তবায়নে জোর দেয়। ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে এ ধরনের তহবিলের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে ১০ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে সরকার। বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গবর্নর এসকে সুর চৌধুরীকে সভাপতি করে এ কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিকে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের পাশাপাশি তহবিলের কার্যপ্রণালী নির্ধারণ এবং আন্তর্জাতিক মানদন্ড- অনুযায়ী এর উত্তম ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে আইন, নীতি ও কারিগরি দিকগুলো পর্যালোচনা করে একটি পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন সরকারের কাছে দাখিল করতে বলা হয়। এছাড়া কমিটিকে তহবিলটি বাস্তবায়নের করণীয় সম্পর্কেও সুপারিশ প্রদানের কথা বলা হয়। দীর্ঘ সময় পর গত ১৫ ডিসেম্বর কমিটি তাদের প্রতিবেদন অর্থমন্ত্রীর কাছে জমা দেয়। এতে এ ধরনের তহবিল সরকার নিজস্ব অর্থে (বাজেটে) গঠন করতে পারে বলে সিদ্ধান্ত দিয়েছে সম্ভাব্যতা যাচাই কমিটি। এজন্য সরকারের করণীয় সম্পর্কে বেশকিছু সুপারিশ করা হয়েছে। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রাথমিকভাবে ছোট আকারে ও বৈদেশিক মুদ্রায় এ ধরনের তহবিল গঠন করা যাবে। এজন্য বিদেশী মুদ্রার প্রয়োজন হলে তা বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে কিংবা মার্কেট থেকে কিনতে হবে। পরবর্তীতে এ তহবিলে দেশীয় কারেন্সিও যোগ করার সুযোগ থাকবে। এতে আরও বলা হয়েছে, নিজস্ব বাজেটে হওয়ায় তহবিলটির মালিক হবে সরকার। ফলে এটির বৈশিষ্ট্যও হবে সার্বভৌম সম্পদ তহবিলের মতো। তবে এর বাস্তবায়নের দায়িত্বে থাকবে সরকার মনোনীত তৃতীয় কোন প্রতিষ্ঠান। দেশের ভেতরের পাশাপাশি বিদেশেও এটি বিনিয়োগ করার সুযোগ থাকবে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট উর্ধতন এক কর্মকর্তা বলেন, বিদেশী সংস্থাগুলো ঋণ যতটা দেয়, তার থেকে শর্তের বোঝা চাপিয়ে দেয় বেশি। ওই শর্ত পূরণ করতে গিয়ে সময়মতো প্রকল্প শুরু হয় না। তাছাড়া এক্ষেত্রে বৈশ্বিক রাজনীতিও সম্পৃক্ত। এ কারণে সরকার বিদেশনির্ভরতা কমাতে চায়। সূত্রমতে, সাধারণত কোন দেশ বা জাতির ব্যয়ের চেয়ে আয় বেশি হলে সেই উদ্বৃত্ত অর্থ দিয়েই এ ধরনের তহবিল গঠন করা হয়ে থাকে। তবে বেশিরভাগ তহবিল সংশ্লিষ্ট দেশের রফতানি আয় অথবা বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে নিয়ে করা হয়। আমাদের দেশের সরকারেরও উদ্বৃত্ত আয় না থাকায় প্রয়োজনের অতিরিক্ত বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে অর্থ নিয়ে এ ধরনের তহবিল গঠনের বিষয়টি আলোচনায় আসে। এ বিষয়ে একাধিকবার গণমাধ্যমকে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত জানিয়েছেন, রিজার্ভ থেকে অর্থ নিয়ে এ ধরনের তহবিল গঠনের চিন্তা করা হচ্ছে। সর্বশেষ গত ১৫ ডিসেম্বর তিনি রিজার্ভের অর্থে ছোট আকারে এ ধরনের তহবিল গঠনের ঘোষণা দেন। এজন্য প্রয়োজনে আইন ও বিধি সংশোধন করা হবে বলেও জানান তিনি। তবে সরকার গঠিত সম্ভাব্য যাচাই কমিটির মতে, রিজার্ভের একটি অংশ দিয়ে এ ধরনের তহবিল গঠন করা সম্ভব। তার জন্য সরকারকে এ রিজার্ভ কিনে নিতে হবে। তবে সরকার চাইলে রিজার্ভ কিনে না নিয়েও এটি করতে পারে। যদিও তখন এটিকে আর সার্ভভৌম সম্পদ তহবিল বলা যাবে না। জানা যায়, এ ধরনের তহবিল গঠন নিয়ে সরকার গঠিত সম্ভাব্যতা যাচাই কমিটি প্রাথমিক খসড়ায় চারটি বিকল্প পন্থার সুপারিশ করেছিল। প্রথমত, বিদ্যমান আইন ও রেগুলেশনের মধ্য থেকে রিজার্ভের অংশ বিদেশে দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগ করা যাবে। বিদেশী কোন এ্যাসেট ম্যানেজার কোম্পানির মাধ্যমে এটি করতে হবে। দ্বিতীয়ত, দেশের অভ্যন্তরেও এটা বিনিয়োগ করা যাবে। এর জন্য বিদ্যমান রিজার্ভ ইনভেস্টমেন্ট রেগুলেশন পরিবর্তন করতে হবে। কারণ বিদ্যমান রেগুলেশন অনুযায়ী রিজার্ভ কেবল বিদেশে বিনিয়োগ করা যাবে। তৃতীয় হলো, এটা বাংলাদেশ ব্যাংকের তত্ত্বাবধানে করা যাবে। এর জন্য বিদ্যমান বাংলাদেশ ব্যাংক অর্ডার ১৯৭২-এর সংশ্লিষ্ট ধারা ও রিজার্ভ ইনভেস্টমেন্ট রেগুলেশন পরিবর্তন করতে হবে। চতুর্থত, তৃতীয় কোন কোম্পানির মাধ্যমেও এটি করা যাবে। এর জন্যও বাংলাদেশ ব্যাংক অর্ডারের সংশ্লিষ্ট ধারা ও বিদ্যমান রিজার্ভ ইনভেস্টমেন্ট রেগুলেশন পরিবর্তন করতে হবে। তবে সরকার রিজার্ভ কিনে নিয়ে এ ধরনের তহবিল গঠন করলে বিদ্যমান আইন ও রেগুলেশন কিছুই পরিবর্তনের দরকার হবে না। একুশে সংবাদ /এ এস / জক / ৩১-০১-২০১৭
Link copied!