AB Bank
ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

দ্বিতীয় পর্বের বিশ্ব এজতেমা শুরু আজ


Ekushey Sangbad

১২:৩০ পিএম, জানুয়ারি ২০, ২০১৭
দ্বিতীয় পর্বের বিশ্ব এজতেমা শুরু আজ

একুশে সংবাদ : বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম মুসলিম জমায়েত বিশ্ব এজতেমার দ্বিতীয় পর্ব শুরু হচ্ছে আজ (শুক্রবার) বাদ ফজর থেকে আম বয়ানের মাধ্যমে টঙ্গীর কহর দরিয়াখ্যাত তুরাগ নদের তীরে । দ্বিতীয় দফায়ও বহাল রয়েছে আগের দফার সব প্রস্তুতি। প্রথম পর্বের পর চারদিন বিরতি দিয়ে শুরু হচ্ছে এজতেমার দ্বিতীয় পর্ব। তবে বৃহস্পতিবার মাগরিব নামাজে পর ময়দানের ছামিয়ানার নিচে জমায়েত হওয়া মুসল্লিদের উদ্দেশে অনানুষ্ঠানিক বয়ান শুরু হয়েছে। রবিবার জোহরের নামাজের আগে (পূর্বাহ্নে) আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে এ বছরের এজতেমা শেষ হবে। দ্বিতীয় পর্বের এজতেমায় যোগ দিতে ঢাকা জেলার একাংশ এবং ১৬ জেলার মুসল্লিদের এজতেমা স্থলে আসা অব্যাহত রয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরের পর থেকে এজতেমা মুখী মানুষের ঢল নামে টঙ্গীর দিকে। বাস, ট্রাক, ট্রেন, ট্রলারসহ বিভিন্ন যানবাহনে করে মুসল্লিরা যোগ দিচ্ছেন এজতেমায়। এবার ১৭ জেলার মুসল্লিদের জন্য এজতেমার পুরো ময়দানকে ২৬ খিত্তায় ভাগ করা হয়েছে। আগামী ২২ জানুয়ারি (রবিবার) দ্বিতীয় পর্বের আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ হবে ৫২তম বিশ্ব এজতেমা। আজ (শুক্রবার) হওয়ায় দেশের সর্ব বৃহৎ জুমার নামাজ অনুষ্ঠিত হবে এজতেমা ময়দানে। গাজীপুর, ঢাকার উত্তরা ও আশপাশের এলাকা থেকে লাখ লাখ মুসল্লি যোগ দেবেন এই জুমার নামাজে। এজতেমা ময়দান ঘুরে দেখা গেছে, দ্বিতীয় পর্বের এজতেমায় যোগ দিতে ইতোমধ্যে কয়েক লাখ মুসল্লি এজতেমা মাঠে সমবেত হয়েছেন। আখেরি মোনাজাতের আগ পর্যন্ত মুসল্লিদের এ আগমন অব্যাহত থাকবে। তারা নিজ নিজ জেলার খিত্তায় অবস্থান নিচ্ছেন। প্রথম পর্বে অংশ নেয়া বেশকিছু বিদেশী মুসল্লি দ্বিতীয় পর্বে অংশ নেয়ার জন্য ময়দানের বিদেশী নিবাসে রয়ে গেছেন। এজতেমা আয়োজক কমিটির অন্যতম সদস্য প্রকৌশলী মোঃ গিয়াস উদ্দিন জানান, এবারের বিশ্ব এজতেমার প্রথম দফার সব প্রস্তুতি দ্বিতীয় দফাও বহাল রয়েছে। ইতোমধ্যে মুসল্লিরা এজতেমা স্থলে আসতে শুরু করেছেন। গত ১৫ জানুয়ারি (রবিবার) প্রথম পর্বের আখেরি মোনাজাতের পর দ্বিতীয় পর্বের এজতেমার ময়দান প্রস্তুতের জন্য এজতেমায় আগত তাবলীগ জামাতের কর্মীরা কাজ করে যাচ্ছেন। তারা এজতেমার প্রথম পর্বে মুসল্লিদের ফেলে রাখা ময়লা-আবর্জনা সরিয়ে পুরো ময়দানকে উপযোগী করে তুলেছেন। এ জন্য ময়দানে তাবলীগের কর্মীরা বেশ কয়েকটি দলে বিভিক্ত হয়ে এ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম চালায়। এছাড়া গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকেও ময়দান পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করার কাজে অংশ নেয়। আগামী রবিবার (২২ জানুয়ারি) আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে এবারের বিশ্ব এজতেমা। এবারও বিশ্ব এজতেমা ময়দানের পশ্চিম-উত্তর দিকে বিদেশী মুসল্লিদের অবস্থানের জন্য বিশেষ আবাসন ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছে। বিদেশী নিবাসে রন্ধনশালায় সার্বক্ষণিক গ্যাস ও বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের ব্যবস্থা করা হয়েছে এবং সেখানে এ্যাম্বুলেন্স ও টেলিফোনসহ প্রয়োজনীয় আধুনিক সুবিধাদি রয়েছে। এ ছাড়াও বিদেশী নিবাসে কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা রয়েছে। এবার ক্রমবর্ধমান বিদেশী মুসল্লিদের জন্য ২০ শতাংশ আবাসনসহ অন্যান্য ব্যবস্থা বাড়ানো হয়েছে। দ্বিতীয় পর্বে ১৭ জেলার মুসল্লিগণ অংশ নেবেন ॥ দ্বিতীয় পর্বের এজতেমায় মুসল্লিদের অংশ নেয়ার জন্য জেলাভিত্তিক পুরো প্যান্ডেলকে ২৬ খিত্তায় (ভাগে) ভাগ করা হয়েছে। এতে ঢাকার একাংশ ও ১৬ জেলার মুসল্লিগণ অংশ নেবেন। দ্বিতীয় পর্বে দেশের বিভিন্ন জেলার মুসল্লিরা খিত্তাওয়ারী যেভাবে অবস্থান নেবেন তা হলোÑ ১ থেকে ৫ নম্বর ও ৭ নম্বর খিত্তায় ঢাকা জেলা, ৬ নম্বর খিত্তায় মেহেরপুর, ৮ নম্বর খিত্তায় লালমনিরহাট, ৯ নম্বর খিত্তায় রাজবাড়ী, ১০ নম্বর খিত্তায় দিনাজপুর, ১১ নম্বর খিত্তায় হবিগঞ্জ, ১২ ও ১৩ নম্বর খিত্তায় মুন্সীগঞ্জ, ১৪-১৫ নম্বর খিত্তায় কিশোরগঞ্জ, ১৬ নম্বর খিত্তায় কক্সবাজার, ১৭ ও ১৮ নম্বর খিত্তায় নোয়াখালী, ১৯ নম্বর খিত্তায় বাগেরহাট, ২০ নম্বর খিত্তায় চাঁদপুর, ২১ ও ২২ নম্বর খিত্তায় পাবনা, ২৩ নম্বর খিত্তায় নওগাঁ, ২৪ নম্বর খিত্তায় কুষ্টিয়া, ২৫ নম্বর খিত্তায় বরগুনা এবং ২৬ নম্বর খিত্তায় বরিশাল জেলা। গাজীপুরের পুলিশ সুপার মুহাম্মদ হারুন অর রশীদ পিপিএম জানান, এ দফায়ও আগের দফার মতোই পোশাকে, সাদা পোশাকে পুলিশের ৬ সহস্রাধিক সদস্য পাঁচটি সেক্টরে এজতেমার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকছে। এছাড়া র‌্যাব, আনসার সদস্য ও এজতেমা কর্তৃপক্ষের নিজস্ব কর্মীরাও তাদের সঙ্গে থাকছেন। বৃহস্পতিবার থেকেই আবার পূর্ণদ্যোমে র‌্যাব ও পুলিশের সদস্যরা স্ব স্ব দায়িত্ব পালন শুরু করেছে। তিনি আরও জানান, বিশ্ব এজতেমার দুই পর্বে মুসল্লিদের নিরাপত্তায় রাখা হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। পুলিশ ও র‌্যাবের কন্ট্রোল রুম থেকে তা পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে এবং ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরাও ব্যবহার করা হচ্ছে। ওয়াচ টাওয়ার থেকে বাইনোকুলারে এবং গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সিসি ক্যামেরা দিয়ে এজতেমা মাঠ ও আশপাশের এলাকা পর্যবেক্ষণ, নৌ টহল, মোটরসাইকেল টহল ছাড়াও থাকছে স্ট্রাইকিং ফোর্স। মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে সন্দেহভাজনদের দেহ তল্লাশিও করা হবে। র‌্যাবের হেলিকপ্টারও মাঠ পর্যবেক্ষণ করবে। প্রথম পর্বের মতো দ্বিতীয় পর্বের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা প্রস্তুত রয়েছে। ৫ স্তরের এ নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যে এজতেমা ময়দান এলাকা ঢেকে রাখা হবে। কোন ধরনের বিশৃঙ্খলা ও অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা যেন ঘটতে না পারে সে বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা সাজানো হয়েছে। এছাড়াও মুসল্লিদেও যাতায়তের সুবিধার্থে বিআরটিসি বাস, স্যাটল সার্ভিস ও স্বাস্থ্যসেবাসহ সব ব্যবস্থা আগের মতোই রয়েছে। এদিকে এজতেমার দ্বিতীয় পর্বেও বাংলাদেশ রেলওয়ে ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন সংস্থা (বিআরটিসি) বিশেষ ট্রেন সার্ভিস ও বাস চলাচলের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। চিকিৎসা সেবা ॥ গাজীপুরের সিভিল সার্জন জানান, প্রথম ধাপের মতো দ্বিতীয় ধাপেও এজতেমায় আগত মুসল্লিদের বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের লক্ষ্যে তাদের সব প্রস্তুতি রয়েছে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকসহ মেডিক্যাল অফিসারদের তালিকা ও ডিউটি রোস্টার করা হয়েছে। মুসল্লিদের বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা দিতে মন্নু গেট, এটলাস গেট, বাটা কারাখানার গেট অস্থায়ী মেডিক্যাল ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে। টঙ্গী হাসপাতালে হৃদরোগ, এ্যাজমা, ট্রমা, বার্ন, চক্ষু এবং ওআরটি কর্নারসহ বিভিন্ন ইউনিটে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা চিকিৎসা দেবেন। এছাড়াও বেসরকারী পর্যায়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও ওষুধ কারখানা প্রতিবছরের মতো এ পর্বেও এজতেমা ময়দানে মুসল্লিদের ফ্রি চিকিৎসা ও ওষুধপত্র বিতরণ শুরু করেছে। হামদর্দ (ওয়াক্ফ) লিঃ, ইবনে সিনা, র‌্যাব-১, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন, টঙ্গী ওষুধ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতি, আয়ুর্বেদীয় মেডিক্যাল, জনকল্যাণ মেডিক্যাল অস্থায়ী চিকিৎসা কেন্দ্র এজতেমা ময়দানের উত্তর পাশে নিউ মন্নু কটন মিলের অভ্যন্তরে চালু করেছে। ভ্রাম্যমাণ আদালত ॥ গাজীপুর জেলা প্রশাসকের কন্ট্রোল রুম সূত্রে জানা গেছে, দ্বিতীয় ধাপে এজতেমা মাঠ ও এর আশপাশের এলাকাকে ২০ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে প্রতিদিন ২টি করে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হবে। বুধবার বিকেল থেকে ভ্রাম্যমাণ আদালত তাদের কার্যক্রম শুরু করেছেন। গাড়ি পার্কিং ॥ প্রথম পর্বের মতো দ্বিতীয় পর্বেও বিশ্ব এজতেমায় বিভিন্ন জেলা থেকে আগত মুসল্লিদের সুবিধার্থে টঙ্গী পাইলট স্কুল এ্যান্ড কলেজ মাঠ, টঙ্গী সফিউদ্দিন সরকার একাডেমি এ্যান্ড কলেজ মাঠ, উত্তরার আজমপুর স্কুল মাঠ, কামারপাড়ায় রানাভোলা মাঠে গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিশ্ব এজতেমার মুরুব্বী গিয়াস উদ্দিন আরও বলেন, বিশ্ব এজতেমায় অংশ নেয়া মুসল্লিদের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় ২০১১ সাল থেকে দেশের ৬৪ জেলার মুসল্লিদের জন্য দুই দফায় বিশ্ব এজতেমা শুরু হয়। ইতোপূর্বে ৬৪ জেলার মুসল্লিদের জন্য তিনদিনের এক দফায় বিশ্ব এজতেমা অনুষ্ঠিত হতো। কিন্তু টঙ্গীর এজতেমা ময়দানে ক্রমবর্ধমান মুসল্লিদের স্থান সংকুলান না হওয়ায় ২০১৫ সাল থেকে দেশের ৩২ জেলার মুসল্লিদের জন্য দুই দফায় বিশ্ব এজতেমা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। এতে এক বছর পর পর ৩২ জেলার মুসল্লিরা এজতেমায় অংশ নেয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। অর্থাৎ গত বছর যে সব জেলার মুসল্লিরা দুই পর্বের বিশ্ব এজতেমায় অংশ নিয়েছিলেন, ওই সব জেলার মুসল্লিরা এ বছর এজতেমায় অংশ নিতে পারবেন না। তারা এবার যার যার জেলায় আঞ্চলিক এজতেমায় অংশ নেবেন। ২০১৫ সাল থেকে এ আঞ্চলিক এজতেমা শুরু হয়েছে। তবে ঢাকা জেলায় মুসল্লি বেশি হওয়ায় ঢাকাকে চার অঞ্চলে ভাগ করা হয়েছে। চার অঞ্চলের এসব মুসল্লিদের বিশ্ব এজতেমায় অংশগ্রহণের সুব্যবস্থা করতে প্রতি দুই বছর প্রত্যেক দফায় এজতেমা ময়দানে তাদের (খিত্তায়) অবস্থান রাখতে হচ্ছে। যার কারণে প্রথম দফায়ও ঢাকা জেলার একাংশের মুসল্লিরা অংশ নিয়েছেন। এ বছর হতে প্রথমবারের মতো চার ভাগে অনুষ্ঠিত হচ্ছে বিশ্ব এজতেমা। দেশের মোট ৩২ জেলা নিয়ে এ বছর এজতেমার দুই পর্ব অনুষ্ঠিত হচ্ছে। পরবর্তী বছরে (২০১৭ সালে) বিশ্ব এজতেমার দুই পর্বে বাকি ৩২ জেলার মুসল্লিরা অংশ নেবে। এ বছরের প্রথম পর্বে ঢাকার একাংশসহ ১৭ জেলার তাবলীগ অনুসারীরা অংশ নেয়। দ্বিতীয় পর্বে অংশ নিচ্ছে ১৫ জেলাসহ ঢাকার বাকি অংশের তাবলীগ অনুসারীরা। তবে বিদেশী মুসল্লিরা প্রতিবছর বিশ্ব এজতেমায় অংশ নিতে পারবে। মুসল্লিদের স্থান সঙ্কুলান না হওয়ায় এবং নিরাপত্তার কথা ভেবে ২০১১ সাল থেকে দুই পর্বের এজতেমা শুরু হয়। একই কারণে এবার আবারও চার পর্বে দুই বছরে এজতেমা আয়োজনের এ পরিবর্তন আনা হলো। বিশ্ব এজতেমার শীর্ষ পর্যায়ের মুরুব্বীরা এজতেমার এ তারিখ নির্ধারণ করেছেন। একুশে সংবাদ / এ এস / জক / ২০-০১-২০১৭
Link copied!