AB Bank
ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

আন্তর্জাতিক বাজার নিয়ে চামড়া ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতঙ্ক


Ekushey Sangbad

০৪:৫৬ পিএম, সেপ্টেম্বর ২৬, ২০১৬
আন্তর্জাতিক বাজার নিয়ে চামড়া ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতঙ্ক

একুশে সংবাদ: ঈদুল আজহায় পশুর চামড়ার দাম কম হওয়ার পেছনে আন্তর্জাতিক ষড়ষন্ত্র দায়ী বলে অভিযোগ করছেন ব্যবসায়ীরা। ফলে চামড়া ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত নানা স্তরের ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। ব্যবসায়ীরা জানান, তৈরি পোশাক শিল্প বা গার্মেন্টস সেক্টরকে যেমন সরকার গুরুত্ব দিচ্ছে তেমনি চামড়া শিল্পেও সরকারের সহযোগিতা প্রয়োজন। অভিযোগ রয়েছে, এ বছর কোরবানির ঈদের আগেই সিন্ডিকেটের মাধ্যমে লবণের দাম প্রায় তিন গুণ বাড়িয়ে দেয় কিছু আসাধু ব্যবসায়ী। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয় চামড়া শিল্পের সঙ্গে জড়িতদের। কারণ চামড়া থেকেও লবণের খরচ বেশি পড়েছে। অসাধু চক্রটি লবণের দাম বৃদ্ধির পর পার্শ্ববর্তী ভারতে চামড়া পাচারের ষড়ষন্ত্র করেছিল। এতে করে বাংলাদেশের চামড়া আন্তর্জাতিক বাজারের মান হারাতে বসেছে। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, ভারত আমাদের দেশ থেকে কম দামে চামড়া কিনে বেশি দামে বিক্রি করছে। শুধু তাই নয়, ভারত বাংলাদেশের চামড়া শিল্প দখল করে নিচ্ছে। এতে বিপাকে পড়তে হচ্ছে দেশিয় চামড়া ব্যবসায়ীদের। সীমান্ত লেদার লিমিটেডের মালিক ও আড়তদার শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘একটা গরুর চামড়ায় ৮ থেকে ১০ কেজি লবণ লাগে। এক বস্তা (৬০ কেজি) লবণ কিনতে ১২০০ থেকে ১৭০০ টাকা পর্যন্ত লেগেছে। চামড়া প্রক্রিয়াজাতকরণে অন্য খরচের চেয়ে লবণের দাম বেশি লেগে যাচ্ছে। গত ঈদে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকায় লবণের বস্তা কিনেছি। এবার ডাবলেরও বেশি দিতে হচ্ছে।’ তিনি জানান, গত ৩ বছরে ৩৫ থেকে ৪০ শতাংশ পশুর চামড়া এখনও লস প্রজেক্ট হিসেবে পড়ে আছে। দাম অনেক কম থাকার কারণে চামড়াগুলো বিদেশে রফতানি করা যাচ্ছে না। গত বছরের ৮০ শতাংশ কোরবানির পশুর চামড়ায় ব্যবসায়ীয়রা ভালো মুনাফা অর্জন করতে পারেনি। অনেকের মূলধন ওঠানোও সম্ভব হয়নি। যার কারণে তাদের ব্যাংক ঋণে সুদের হার অনেক গুণ বেড়ে গেছে। আর এ সুযোগ নিচ্ছে অন্য দেশ। অন্য ব্যবসায়ীরা জানান, ভারতের বিভিন্ন পার্টি এদেশের প্রভাবশালী মহলের সঙ্গে যোগসূত্র করে চামড়া শিল্পের ওপর একটি নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। তাদের চাপে দেশে চামড়ার দাম কমানো হচ্ছে। আর কোনো ঝামেলা ছাড়াই তারা এদেশ থেকে চামড়া পাচার করে নিয়ে যাচ্ছে। ব্যবসায়ী সূত্র জানায়, আমাদের দেশে চামড়ার দাম কমার পেছনে আরও কিছু কারণ দায়ী। যেমন, ভারত থেকে বাংলাদেশে প্লাস্টিক, কাপড় ও রাবারের প্রচুর জুতা-স্যান্ডেল এবং অন্যান্য পণ্য আসে। যার কারণে দেশে চামড়ার জুতা ও চামড়ার দাম অনেক কম। ভারতের বিভিন্ন জুতা বাংলাদেশে প্রবেশ করায় দেশে ফুটওয়্যার ব্যবসা দিন দিন মার খাচ্ছে বলেও জানায় সূত্রটি। ব্যবসায়ীরা জানান, কোরবানি ঈদে বেশির ভাগ ব্যবসায়ী বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে থাকেন। কোনো কোনো ব্যবসায়ী ৫ থেকে ৫০ কোটি টাকা ঋণ নেন। আবার ট্যানারি ভেদে ১০০ থেকে ১৫০ কোটি টাকাও ব্যাংক থেকে ঋণ নেন ব্যবসায়ীরা। ব্যাংক ঋণের ব্যাপারে অভিযোগ করে তারা বলেন, যেসব ব্যবসায়ী কোরবানি পশুর চামড়া বিদেশে রফতানি করবে তাদের ৭ থেকে ১০ শতাংশ সুদ পরিশোধ করতে হবে। শর্ত অনুযায়ী এর মেয়াদকাল থাকে মাত্র ১২০ দিন। মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে আবার এটাকে রিনিউ করতে হবে। আবার যেসব ব্যবসায়ী চামড়া রফতানি না করে দেশেই ব্যবসা করেন তাদের ১৩ থেকে ১৭ শতাংশ হারে সুদ পরিশোধ করতে হবে। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বাংলাদেশ হাইড এন্ড মার্চেন্টস এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক হাজী টিপু বলেন, ‘আন্তর্জাতিক বাজারে আমাদের দেশের কোরবানি পশুর চামড়া রফতানি ৩০ শতাংশ কমে গেছে। বিদেশিরা আমাদের কাছ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। তাছাড়া আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত থেকে বিভিন্ন রাষ্ট্র পশুর চামড়া ক্রয় করছে বেশি দামে। আর আমাদের দেশে সিন্ডিকেটের কারণে চামড়ার দাম কমে গেছে।’ তিনি বলেন, ‘সরকার যদি দেশের তৈরি পোশাক শিল্পের মতো চামড়া শিল্পকে গুরুত্ব দেয় তাহলে বেশি পরিমাণে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব।’ চামড়ার আন্তর্জাতিক বাজার ধরে রাখার জন্য সরকারের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি। তিনি আরো বলেন, ‘আমরা চামড়া শিল্প থেকে প্রতিবছর ১ দশমিক ২ বিলিয়ন (১২০ কোটি) ডলার আয় করছি। তবে সরকার আমাদের দিকে সুনজর দিলে সামনে ২ দশমিক ৫ বিলিয়ন (২৫০) ডলার আয় করা সম্ভব হবে।’ ব্যাংক ঋণের ব্যাপারে তিনি বলেন, ব্যাংক ঋণে সুদের হারের বিষয়টি সরকারের নজরে আসা প্রয়োজন। কারণ ব্যাংক এত বেশি সুদ আদায় করে যে, পরবর্তীতে ব্যবসায়ীদের অনেক বিপদে পড়তে হয়। বাংলাদেশ হাইড এন্ড মার্চেন্টস এসোসিয়েশনের সভাপতি দেলোয়ার হোসেন বলেন, বাংলাদেশে তৈরি পোশাক খাতের পরই চামড়া শিল্পের অবস্থান। আমাদের চামড়া শিল্পের মধ্যে যে সম্পদ লুকায়িত আছে সে সম্পদকে কাজে লাগাতে সরকারের সহযোগিতা সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। সরকারের সহযোগিতা থাকলে কোনো সিন্ডিকেট চামড়া পাচার করতে পারবে না এবং আন্তর্জাতিক বাজার আমাদের দখলে থাকবে। ফলে দেশের বাণিজ্য আরও প্রসারিত হবে। একুশে সংবাদ ডটকম//আরিফ//২৬-০৯-২০১৬
Link copied!