যুদ্ধ না হলেও পাক জঙ্গি দমনে সামরিক অভিযান চলবে - মোদি
একুশ সংবাদ : প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আজ তাই ঘোষণা করলেন, ‘যুদ্ধ বিকল্প নয়। কিন্তু জঙ্গি দমনে সামরিক অভিযান হবেই ।’পাকিস্তানের ব্যাপারে নরম সুরে কথা বলার একদিন পরই হুঙ্কার ছাড়লেন মোদি। পরিস্থিতি বুঝেই তার এই হুঙ্কার। কারণ, যে উরি নিয়ে দেশের মাটিতে তৈরি হওয়া ক্ষোভ সামাল দেওয়া সম্ভব নয়, সেটা তিনি বুঝতে পারছেন হাড়ে হাড়ে।
রোববার তিনি সামনে এনেছিলেন গরিবি হটানো নিয়ে দু’দেশের মধ্যে লড়াইয়ের তত্ত্ব। কিন্তু উরির ঘটনার পর প্রধানমন্ত্রীর ‘মৌখিক’হুঙ্কার এবং কৌশল বিতর্কই বাড়িয়েছে শুধু। কারণ তার বক্তব্যে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কড়া জবাবের হদিসই ছিল অমিল। আজ তাই পরিস্থিতি সামাল দিতে কৌশল কিছুটা পাল্টালেন মোদি। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে দেশের মাটিতে রোষ সামাল দিতে মাঝামাঝি পথ নিলেন। তার বক্তব্য, যুদ্ধ না হলেও পাক জঙ্গি দমনে সামরিক অভিযান হচ্ছেই।
বিজেপির পরিষদের বৈঠকে এই ঘোষণা করার আগে আজ আকাশবাণীর অনুষ্ঠানেও মোদি উরি প্রসঙ্গে বলেছেন, আমাদের সেনা বেশি কথা বলে না, বীরত্বেই জবাব দেয়।’বিরোধীরা কিন্তু মনে করছেন, মোদি আসলে সেনাবাহিনীর ঘাড়ে বন্দুক রেখে দায় এড়িয়ে যাচ্ছেন। কংগ্রেস আগে থেকেই অভিযোগ করে আসছে মোদির পাক-নীতি দিশাহীন। মোদির এ দিনের ঘোষণার পরেও তারা একই অভিযোগ তুলে সরব হয়েছে। কারণ, গতকালের মতো আজও পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সরাসরি কোনো রকম পদক্ষেপের কথা তিনি বলেননি। বলেছেন জঙ্গি দমনের কথা।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ মোদির সুরে সুর মিলিয়ে বলেছেন, প্রতিরক্ষা মন্ত্রী মনোহর পর্রীকরের সামনেই অমিত বলেন, ‘পাকিস্তান সরকারি নীতি হিসেবে সন্ত্রাসবাদ চালাচ্ছে, কোনোভাবেই এটি যুদ্ধ অপরাধের থেকে কম নয়। নওয়াজ শরিফ সন্ত্রাসবাদীদের সমর্থন করছেন। আমাদের সেনারা আট মাসে ১১৭ জন সন্ত্রাসবাদীকে মেরেছে। সেই হতাশাতেই উরিতে হামলা। কিন্তু এর জবাব সেনা দেবেই। লড়াই যতই দীর্ঘ হোক না কেন।’
আলোচনা হলে অবধারিতভাবে যে প্রশ্নটি উঠে আসত, তা হল, কড়া জবাব কবে, কী ভাবে, কোন পথে দেওয়া হবে? আসলে পাঠানকোটের পর উরির ঘটনা ঘটে যাওয়ায় এখন নিজের সঙ্গেই নিরন্তর লড়তে হচ্ছে মোদিকে। বিরোধী নেতা হিসেবে যে মোদি এক সময় কথায় কথায় পাকিস্তানকে কড়া জবাব দেওয়ার কথা বলতেন, প্রশ্ন উঠছে আজ তিনি শুধুমাত্র কূটনৈতিক চাপ বাড়িয়েই ক্ষান্ত কেন? মুখে হুঙ্কার দিয়েও বাস্তব পদক্ষেপে কেন পিছপা?
বিজেপির এক শীর্ষনেতার কথায়, ‘আসলে সেনা কখন কোথায় কিভাবে জবাব দেবে, সেটি তো আগে ঢাকঢোল পিয়ে বলার নয়। কিন্তু ক্ষুব্ধ দেশবাসী সেটিই শুনতে চাইছেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ থেকে। সেই উত্তর না পাওয়াতেই ক্ষোভ জমছে। তাই প্রধানমন্ত্রী বারবার সেনার ওপরে ভরসা রাখতে বলছেন।’ একই সঙ্গে দলের ভেতর-বাইরে এই রোষে কিভাবে রাশ টানা যায়, সেটিও ভাবতে হচ্ছে মোদিকে।
একুশে সংবাদ ডটকম//এমএ//২৬-০৯-২০১৬
Link copied!
আপনার মতামত লিখুন :