AB Bank
ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

নড়াইলে দিন দিন পানের আবাদ বাড়ছে


Ekushey Sangbad

০৪:৪৬ পিএম, জুলাই ২৭, ২০১৬
নড়াইলে দিন দিন পানের আবাদ বাড়ছে

একুশে সংবাদ: নড়াইল প্রতিনিধি■নড়াইলে দিন দিন পানের আবাদ বৃদ্ধিপাচ্ছে। জেলার চাহিদা মিটিয়ে উৎপাদনের ৮৫ ভাগ পান যাচ্ছে রাজধানীতে। কম খরচে লাভ বেশি হওয়ায় কৃষকরা ঝুকছেন পান চাষে। গেল ১০ বছর পূর্ব থেকে বর্তমানে জেলায় পানের আবাদ বেড়ে দ্বিগুন হয়েছে। পান চাষিদের সাথে কথা বলে জানাগেছে, ভাদ্র-আশ্বিন মাসে দোঁয়াশ মাটিতে আগাছা পরিস্কার করে তিন বার চাষ দিয়ে প্রতি এক শতক জমিতে ২ কেজি ফসফেট , ১ কেজি চুন ও ২০০ গ্রাম লিজেন্ট মাটির সাথে ভাল করে মিশিয়ে দিয়ে দেড় ফুট দূরত্বে সারি বেধে মাটি উচু করে ১ফুট দূরত্বে পানের কান্ড লাগিয়ে দিতে হয়। প্রতিটা পানের লতা থেকে ১২-১৫ টি চারা লাগানো যায় এবং বাঁশ , পাটকাঠি, জিআই তার ,কাশবন, সুপারি পাতা ও সুতা দিয়ে পানের বরজ বানাতে হয়। জমির চারিদিকে বাঁশ ও সুপারি পাতা দিয়ে বেড়া দিতে হয় এবং জমির উপরে জিআই তার ও কাশবন দিয়ে চাল বানানো হয়। মাটি থেকে পানের লতা যখন ৪-৫ ইঞ্চি লম্বা হয় তখন পাশে ১ টি ৫-৬ ফুট লম্বা পাটকাঠি পুতে দেওয়া হয়।পানের লতাটি ধীরে ধীরে বড় হয় এবং পাটকাঠি বেয়ে উপরে উঠতে থাকে। ৫-৬ মাস পর থেকে পান বিক্রি উপযোগি হয় এবং এরপর প্রতি ৮-১০ দিন পরপর পান বাজারে নেওয়া যায়। ১ টি বরজ থেকে সর্বনি¤œ ১৫ বছর একাধারে পান পাওয়া যায়। যদি পানের ফাপ পচা রোগ না হয় তাহলে বরজটি ৪০-৫০ বছর থাকে। আষাড় -শ্রাবণ মাসে পানের ফাপ পচা রোগ হয় এটি পানের সবচেয়ে বড় রোগ এ রোগ দমনে ফ্লোরি ,এডমা ও কাফেডার নামে এই তিনটি ঔষধ ব্যবহার করা হয়। শীতের সময় এক প্রকার বিষাক্ত কুয়াশা পান গাছে লাগলে পান পাতা ঝরে যায় এতে চাষীদের মারাত্বক ক্ষতি হয় । এ প্রতিরোধে কোন ঔষধ না থাকায় বিপাকে পড়ে চাষীরা। অনেক চাষীরা কুয়াশা ঠেকানোর জন্য বরজের চারিপাশ পলিথিন দিয়ে ঢেকে দেয়। নড়াইলে সাধারনত দুই প্রকার পান চাষ হয় মিষ্টি পান ও সাচি পান। তবে জেলায় মোট চাষের ৮০ ভাগই মিষ্টি পান । এ বছর জেলায় বানিজ্যিক ভিত্তিতে ১৮০৮ একর জমিতে পানের আবাদ হয়েছে। জেলার তিনটি উপজেলার মধ্যে কালিয়া উপজেলার প্রায় পঞ্চাশ ভাগ পান চাষ হয়। দশ বছর আগে জেলায় পানের আবাদ হত মাত্র ৭শ থেকে ৮শ একর জমিতে। বর্তমানে তা বেড়ে দিগুন হয়েছে। নড়াইল জেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে সদরের কুরুলিয়া, রঘুনাথপুর, পোড়াবাদুরিয়া, গোবরা, গোয়ালবাড়ীসহ ,বীড়গ্রাম লোহাগড়া উপজেলার এড়েন্দা,শারুলিয়া, ধোপাদা, মল্লিকপুর, দিঘলিয়া, রামপুরা, লক্ষিপাশা, ইতনা এবং কালিয়া উপজেলার বড়দিয়া, মহাজন, টুনা, খাসিয়াল, বাঅইসোনা, কলাবাড়িয়া, পুরুলিয়া গ্রামসহ বিভিন্ন এলাকায় বানিজ্যিক ভিত্তিতে পানের আবাদ হয়। তবে কালিয়া উপজেলায় পানের চাষ অনেক বেশি হয়। এসব এলাকায় দিনি দিন পানের আবাদ আরো বৃদ্ধিপাচ্ছে। জেলার চাহিদা মিটিয়ে এখানকার পান চলে যাচ্ছে ঢাকা, খুলনাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়। সদর উপজেলার গোয়ালবাড়ী গ্রামের পান চাষি ভক্ত বিশ্বাস জানান, পান চাষ আমাদের পূর্ব পুরুষের পেশা এ পেশা আমি ধরে রেখেছি। ২৫ বছর যাবৎ পানের আবাদ করছি। বর্তমানে আমার ৭২ শতক জমিতে ২ টি বরজ আছে। পান চাষ করতে প্রথম বছরে খরচ বেশি হয় ১ একর জমিতে প্রথম বছরে ১ লক্ষ ২০ থেকে ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা খরচ হয়। ২য় বছর থেকে খরচ খুবই কম। প্রতি বছর খরচ বাদে একর প্রতি সাড়ে ৪ লক্ষ থেকে ৫ লক্ষ টাকা লাভ হয়। এর উপর নির্ভর করে আমার সংসার চলছে। ভালভাবে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে জীবন যাপন করছি। লক্ষি রানী বিশ্বাস বলেন, পান চাষ করেই আমাদের সংসার চলে আমি এবং আমার স্বামী দুজনেই বরজে কাজ করি। ২৭ বছর ধরে পানের বরজ করে আসাছি । বর্তমানে ২৩ শতক জমিতে পানের বরজ রয়েছে। প্রতিহাটে সপ্তাহে (দুইদিন) ৮ থেকে ১০ হাজার টাকার পান বিক্রী করি।এখান থেকেই আয় করে সংসারের খরচসহ সন্তানদের লেখাপড়া করানো হয়। এসকল পান লোহাগড়া উপজেলার লোহাগড়া বাজার, এড়েন্দা, দিঘলিয়া বাজার, কালিগঞ্জ বাজার, শিয়েরবর হাট, কালিয়া উপজেলার কালিয়া বাজার, বড়দিয়া বাজার, চাচুড়ি বাজার, চাপাইল বাজার, নড়াগাতি বাজার, সদর উপজেলার বাশঁগ্রাম বাজার, তুলারামপুর হাট, চালিতাতলা বাজার, মাইজপাড়া বাজার ও জেলার সবচেয়ে বড় বাজার রুপগঞ্জ বাজারসহ জেলার বিভিন্ন হাটে পাইকারি ও খুচরা পান বিক্রি করা হয়। নড়াইল শহরের রুপগঞ্জের হাটে প্রতি রোববার ও বৃহস্পতিবার পানের সবচেয়ে বড় হাট বসে। ৮০ টা পানে ১ পন হয় যা আকার ভেদে ৪০-২০০ টাকা দরে বিক্রি করা হয়। পান ব্যবসায়ী খোকন দাস ও গোপাল বিশ্বাস জানান, আমরা দির্ঘদিন যাবৎ পানের ব্যবসা করে আসছি। নড়াইলের বিভিন্ন হাট থেকে পান কিনে নিয়ে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় বিক্রি করি । এখানকার পান সুস্বাধু হওয়ায় এ পানের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। আমাদের লাভও ভাল হয়। জেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শেখ আমিনুল হক জানান, নড়াইলের মাটি পান চাষের জন্য বেশ উপযুক্ত হওয়ায় এখানে দীর্ঘদিন ধরে প্রচুর পরিমানে বিভিন্ন প্রজাতির পানের চাষ করে চাষিরা। বর্তমানে বিভিন্ন গ্রামের চাষীরা বাণিজ্যিক ভিত্তিতে অনেক পানের চাষ শুরু করেছে । প্রতি বছর পানের আবাদ বৃদ্ধি পাচ্ছে। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে কৃষকদের সকল প্রকার পরামর্শসহ সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করা হচ্ছে। একুশে সংবাদ ডটকম//এম//২৭.০৭.১৬
Link copied!