গাইবান্ধাসহ উত্তাঞ্চলে আলুর বাম্পার ফলন,দুঃশ্চিন্তায় চাষীরা
গাইবান্ধা প্রতিনিধি : রংপুরে আবহাওয়া অনুকূল থাকায় এবার এ অঞ্চলে আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে। আবাদ হয়েছে ল্যমাত্রার চেয়ে বেশি। কিন্তু এই ভালো ফলন চমকে দিয়েছে কৃষককে। সেই সাথে বাড়িয়ে দেয় লোকসান হবার দুঃশ্চিন্তাও। পরপর কয়েকবার লোকসান গুনে নিঃস্ব হবার সেই স্মৃতি আজো নিরবে কাঁদায় কৃষকদের । তাই আলুর এই মওসুমে রাজনৈতিক অস্থিরতা বন্ধ এবং পর্যাপ্ত কোল্ড স্টোরেজ নির্মাণ ও দাম নির্ধারণের দাবি প্রান্তিক চাষিদের।
রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের দেয়া তথ্য মতে, রংপুরের ৮ জেলায় প্রাথমিকভাবে ১ লাখ ৫৬ হাজার হেক্টর জমিতে আলু আবাদের টার্গেট করা হয়েছিল। কিন্তু এবার টার্গেট ছাড়িয়ে ১ লাখ ৭১ হাজার ৪৬৩ হেক্টর জমিতে আলু আবাদ হয়েছে। কৃষি বিভাগ ও চাষিরা জানায়, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার ৫১ লাখ ১ হাজার ২৪২ মেট্রিক টন আলু উৎপাদনের টার্গেট নির্ধারণ করা হয়েছে। এরমধ্যে রংপুর জেলায় ৫২ হাজার ১৮৫ হেক্টর, দিনাজপুর জেলায় ৪৩ হাজার ১০০, ঠাকুরগাঁ জেলায় ২২ হাজার ৭৬০, নীলফামারী জেলায় ২২ হাজার ৪১৫, পঞ্চগড় জেলায় ১০ হাজার ১৫২, গাইবান্ধা জেলায় ১০ হাজার ৩৫, কুড়িগ্রাম জেলায় ৫ হাজার ৬৬৬ এবং লালমনিরহাট জেলায় ৫ হাজার ১৫০ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে।
কৃষকরা বলছে, আবাদের শেষ পর্যন্ত এই আবহাওয়া থাকলে প্রতি হেক্টর জমিতে ২৯.৭৫ মেট্রিক টন আলু উৎপাদন হবে। গত মৌসুমে এই অঞ্চলে ১ লাখ ৬৫ হাজার ৫২৯ হেক্টর জমিতে আলু আবাদ হয়েছিল, যা থেকে আলু উৎপাদন হয়েছিল ৪৫ লাখ ৩১ হাজার ৩১৩ মেট্রিক টন।
কৃষি অফিস জানায়, আলু চাষের জন্য সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৫ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দিনে গড়ে তাপমাত্রা সর্বোচ্চ ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং রাতে সর্বোচ্চ ১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস থাকা প্রয়োজন। আবাদের শুরু থেকে শীত বেশি পড়লে তাপমাত্রা কমে যায় এবং এ অবস্থা দীর্ঘদিন ধরে অব্যাহত থাকলে আলুর আবাদ ভালো হয়। এবার সেই আবহাওয়া আছে এই অঞ্চলে।
কৃষকরা বলছে, প্রতি ২৪ শতক জমিতে খরচ হয় ১৫ হাজার টাকা। আলু হয় ২৫ থেকে ৩০ বস্তা। সে অনুযায়ী কমপেে প্রতি বস্তা আলুর দাম ৮শ টাকা হলে লোকসান হবে না। কিন্তু সেই দাম আদৌ পাব কিনা তা নিয়ে নিয়ে শঙ্কা কাটছে না আমাদের।
রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের বিভাগীয় উপ-পরিচালক মকবুল হোসেন জানান, রংপুর বিভাগের আট জেলায় এ বছর আলুর আবাদ হয়েছে ল্যমাত্রার চেয়ে বেশি। আর ফলনও হয়েছে বাম্পার। তবে, ন্যায্য মূল্য নিয়ে আশঙ্কায় রয়েছেন কৃষকরা। যদি চাষীদের উৎপাদিত ফসলের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করা না হয় তাহলে সবজি চাষে কৃষকরা আগ্রহ হারাতে পারে।
Link copied!
আপনার মতামত লিখুন :