আত্রাইয়ে বন্যায় বিধ্বস্ত সড়ক সংস্কার না করায় লক্ষাধিক মানুষের ভোগান্তি
নাজমুল হক নাহিদ, আত্রাই (নওগাঁ) প্রতিনিধিঃ নওগাঁর আত্রাইয়ে বন্যায় আত্রাই-নওগাঁ প্রধান সড়ক বিধ্বস্ত হওয়ার পর এখনও পর্যন্ত সংস্কার না করায় জনদুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে। এ সড়কগুলো সংস্কার না করায় আত্রাই উপজেলাসহ পার্শ্ববর্তী উপজেলার লক্ষ লক্ষ মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। সড়কটি সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন জনপ্রতিনিধিসহ স্থানীয় বাসিন্দারা। তথ্যঅনুসন্ধানে জানা যায়, এবার আত্রাই উপজেলায় স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যা হয়েছিল। ফলে উপজেলার ছোট যমুনা নদীর তীরবর্তী ফুলবাড়ী বন্যানিয়ন্ত্রণ বেড়িবাঁধ, উপজেলার মিরাপুর নামক স্থানে নওগাঁ-আত্রাই আঞ্চালিক সড়কের বাঁধ, ভরতেঁতুলিয়া বেড়িবাঁধ ও হাটকালুপাড়া বন্যানিয়ন্ত্রণ বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে আত্রাই উপজেলার ৬৫টি গ্রাম ও রাস্তা ঘাট পানির নিচে তলিয়ে যায়।
ভেঙ্গে যায় উপজেলার আত্রাই-নওগাঁ মেইন সড়ক, আত্রাই-ভবানীগঞ্জ সড়ক, আত্রাই-সিংড়া সড়ক, আত্রাই-প্রতিসর সড়ক ও উপজেলার ভবানীপুর- শাহাগোলা সড়কসহ প্রতিটি রাস্তাঘাট ক্ষতবিক্ষত হয়। অধিকাংশ রাস্তাগুলো বন্যার পানিতে নিমজ্জিত হয়ে যাওয়ায় বন্যার পানি নামার সাথে সাথে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন উপজেলার সকল স্তরের মানুষ। এসব রাস্তাঘাট দিয়ে প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন চলাচল করছে। ঘটছে একের পর এক দুর্ঘটনা। তবে এগুলো রাস্তাঘাট সংস্কারে কর্তৃপক্ষের নেই কোন উদ্যোগ। এদিকে বন্যায় বিধ্বস্ত সড়ক যোগাযোগের কারণে কৃষক তাদের ফসলের ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
উপজেলার হাতিয়াপাড়া গ্রামের মামুনুর রশিদ জানান, আমাদের এলাকায় বন্যার কারনে আত্রাই থেকে নওগাঁ জেলার সাথে যোগাযোগের একমাত্র রাস্তা বিধ্বস্ত হওয়ায় কৃষিপণ্য থেকে শুরু করে চিকিৎসা সেবা ও জেলা শহরের সাথে যোগাযোগের ক্ষেত্রে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এলাকাবাসীকে। তিনি দ্রুত রাস্তাটি মেরামত করার জন্য দাবি জানিয়েছেন।
উপজেলার শিকারপুর গ্রামের আব্দুল মান্নান বলেন, আত্রাই সিংড়া সড়ক দীর্ঘ দিন থেকে বেহাল দশা হয়ে রয়েছে। বিশেষ করে হেলিপ্যাড বড়ব্রিজ থেকে বৈঠাখালী পর্যন্ত এ সড়কে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়ে মনণফাঁদে পরিণত হয়েছে। মালিপুকুর , গুরনই, চকবিষ্টপুর, জগদাস, শিকারপুর, ডুবাই, বৈঠাখালীসহ প্রায় অর্ধশতাধিক গ্রামের লোকজন এই একটি মাত্র সড়কের উপরই নির্ভশীল।
উপজেলার শাহাগোলা গ্রামের আব্দুস ছালাম বলেন, উপজেলা সদরের সাথে আমাদের গ্রামের রাস্তাটি বন্যায় বিধ্বস্ত হয়ে থাকলেও এখনও পর্যন্ত সংস্কার করা হয়নি। রাস্তাটি বিধ্বস্ত হওয়ায় কোন অসুস্থ বেক্তিকে উপজেলা সদর হাসপাতালে নিতে চরম বিপাকে পড়তে হয়। অথচ এটি একটি জনগুরুত্বপূর্ণ রাস্তা হওয়ার পরও কর্তৃপক্ষের নেই কোন মাথা ব্যাথা।
বজ্রপুর গ্রামের মোতালেব মন্ডল বলেন, আত্রাই-ভবানীগঞ্জ সড়কের আত্রাই অংশ খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। বন্যা মৌসুমে সড়কটিতে পানি জমে থাকার কারণে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। বিভাগীয় শহর রাজশাহীর সাথে যোগাযোগের জন্য এটি একমাত্র সড়ক কিন্তু কর্তৃপক্ষের নেই কোন সুদৃষ্টি।
আত্রাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোখলেছুর রহমান বলেন, বন্যায় বিধ্বস্ত সড়ক ও রাস্তাঘাটগুলো সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। কিন্তু রাস্তা সংলগ্ন স্থানগুলো না শুকানোর ফলে মাটির সংকট রয়েছে। রাস্তা সংলগ্ন স্থানগুলো শুকানোর সাথে সাথে যত দ্রুত সম্ভব রাস্তাগুলো পুননির্মাণ করা হবে।
Link copied!
আপনার মতামত লিখুন :