‘আইএস লড়াইয়ে বিপর্যস্ত হয়ে শত্রু দেশে হামলা চালাচ্ছে’
একুশে সংবাদঃ সিরিয়া ও ইরাকের দখলকৃত এলাকায় স্বঘোষিত খিলাফতে সামরিক বিপর্যয়ের মুখে পড়ে ইসলামিক স্টেট (আইএস) সম্ভবত লড়াইটিকে ফ্রান্সসহ ও অন্যান্য দেশে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে আইএসের মুখপাত্র আবু মোহাম্মদ আল-আদনানি চরম উগ্রপন্থি গোষ্ঠীটির সদস্যদের এমন নির্দেশনা দিয়েছেন বলে জানা গেছে। খবর রয়টার্সের।
সিরিয়ার গৃহযুদ্ধের সুযোগে আইএস গোষ্ঠী দেশটির উত্তর পূর্বাঞ্চলের বিশাল অংশ দখল করে। পরে ২০১৪ সালে ইরাকের উত্তরাঞ্চলও দখল করে নেয়। তারপর থেকে গোষ্ঠীটি প্রায়ই পশ্চিমা দেশগুলোতে হামলা চালানোর হুমকি দিয়ে আসছিল। কিন্তু সমপ্রতি সিরিয়ায় রাশিয়ার ব্যাপক বিমান হামলায় বিপর্যয়ে পড়ে গোষ্ঠীটি। পাশপাশি যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক জোটও আইএসের বিরুদ্ধে বিমান হামলা বাড়িয়ে দেয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে গোষ্ঠীটি শত্রুদের বিরুদ্ধে লড়াই ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে এমন ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।
সিরিয়ার উত্তরাঞ্চল থেকে আইএসের এক যোদ্ধা জানিয়েছেন, তারা এ মর্মে লিখিত নির্দেশ পেয়েছেন। তিনি বলেন, ‘এক লিখিত আদেশে আদনানি সব সেক্টর ও নিরাপত্তা ব্রিগেডগুলোকে লেবানন ও তুরস্কসহ বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়ার নির্দেশ দিয়েছেন। লেবানন ও ফ্রান্সসহ অন্যান্য জায়গায় চালানো হামলাগুলোর সবই দুই মাস আগে দেয়া অভিযান আদেশের অংশ।
শুক্রবার রাতে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে হামলা চালিয়ে ১৩২ জনকে হত্যা ও বৃহস্পতিবার লেবাননের রাজধানী বৈরুতের শিয়া অধ্যুষিত এলাকায় বোমা হামলা চালিয়ে ৪৩ জনকে হত্যা, উভয় ঘটনার দায় স্বীকার করেছে আইএস। সিরিয়া ও ইরাকে আইএসের অবস্থানে ফরাসি বিমান হামলার প্রতিশোধ হিসাবে ফ্রান্সে হামলা চালানো হয়েছে এবং লেবাননের শিয়া হিজবুল্লাহ গোষ্ঠী সিরিয়ায় তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করার কারণে বৈরুতে বোমা হামলা চালানো হয়েছে বলে দাবি করেছে গোষ্ঠীটি। এর আগে মিসরের সিনাই উপদ্বীপে রাশিয়ার একটি যাত্রীবাহী বিমান উড়িয়ে দেওয়ারও দাবি করেছে গোষ্ঠীটি। ৩১ অক্টোবরের ওই ঘটনায় রুশ বিমানটির ২২৪ আরোহীর সবাই নিহত হন।
সিরিয়ায় আইএসের বিরুদ্ধে রুশ বিমান হামলার প্রতিশোধ নিতেই যাত্রীবাহী বিমানটি ধ্বংস করা হয়েছে বলে দাবি করেছে আইএস। তুরস্ক কর্তৃপক্ষের ধারণা, গেল সপ্তাহে দেশটিতে আটক হওয়া এক কুখ্যাত ব্রিটিশ জঙ্গি সম্ভবত ইস্তাম্বুলে প্যারিসের মতো একই ধরনের হামলা চালানোর পরিকল্পনা করছিল। রবিবার তুর্কি নিরাপত্তা বাহিনীর দুটি সূত্র বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এই কথা জানিয়েছে।
গোষ্ঠীটি যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ও সৌদি আরবেও হামলার হুমকি দিয়েছে। তবে আইএস মুখপাত্রের কথিত ওই আদেশের বিষয়টি তাত্ক্ষণিকভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি। আইএসের সমর্থক ও যোদ্ধারা জানিয়েছেন, আদেশটি বাস্তবায়নের জন্য বিভিন্ন জায়গায় গোষ্ঠীটির সুপ্ত অবস্থায় থাকা সেলগুলোকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলভিত্তিক ওই যোদ্ধা বলেন, ‘রক্তপাত ও ব্যাপক হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমেই তারা আমাদের বার্তা দেয়, তাই আমরা একই পদ্ধতিতে তাদের বার্তা তাদের ফিরিয়ে দিচ্ছি, এতে কোনো জটিলতা নেই।’
চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে আইএসের মুখপাত্র আবু মোহাম্মদ আল-আদনানি চরম উগ্রপন্থী গোষ্ঠীটির সদস্যদের এমন নির্দেশনা দিয়েছেন বলে জানা গেছে।
একুশে সংবাদ ডট কম/ আলম গীর হােসেন/ ১৬.১১.২০১৫
Link copied!
আপনার মতামত লিখুন :