কাঁচামরিচের প্রতি কেজি ২০০ টাকা, পিঁয়াজের দাম কিছুটা কম
একুশে সংবাদঃ দুই দিন আগে মঙ্গলবার রাজধানীর খুচরা বাজারগুলোতে প্রতিকেজি কাঁচামরিচ বিক্রি হয়েছে ১৪০ থেকে ১৫০ টাকায়। শুক্রবার বাজারে সেই কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকায়। দুই দিনের ব্যবধানে কেজিপ্রতি কাঁচামরিচের দাম বেড়েছে ৫০ টাকা থেকে ৬০ টাকা।
এদিকে বাজারে পিঁয়াজের দাম কমতে শুরু করছে। পিঁয়াজের দাম কমলেও অন্যান্য পণ্যের দরে অস্থিরতা যেন কোনোভাবেই থামছে না। পাইকারি বাজারে দাম বাড়ার অজুহাত দেখিয়ে পণ্য বেশি দরে বিক্রি করছে খুচরা বিক্রেতারা।
দেশে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বাড়ানোর কারণে পণ্যের বাজার আরো অস্থির হওয়ার আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা। খুচরা ব্যবসায়িদের মতে, বিদ্যুতের দাম বাড়ায় দোকান ভাড়া বেড়ে যাবে। সেই সঙ্গে পণ্যের দামও বাড়তি থাকবে।
রাজধানীর যাত্রাবাড়ী, কাপ্তান বাজার, সেগুন বাগিচা, শান্তিনগর বাজারে গিয়ে দেখা গেছে- মানভেদে প্রতিকেজি গাজর ৬০ থেকে ৬৫ টাকায়, শশা ৫০ টাকা থেকে ৬০ টাকায় (মঙ্গলবার দর ছিল ৪৫ টাকা থেকে ৫০ টাকা), করলা ৫৫ টাকা থেকে ৬০ টাকায়, ঝিঙা ৫০ টাকা থেকে ৫৫ টাকায়, বেগুন ৫৫ টাকা থেকে ৬০ টাকায়, গোল বেগুন ৬০ টাকা থেকে ৬৫ টাকায়, পটল ৫০ টাকা থেকে ৫৫ টাকায়, কাকরল ৬০ টাকা থেকে ৬৫ টাকায়, ভেণ্ডি ৬০ টাকা থেকে ৬৫ টাকায়, ওস্তা ৬০ টাকা থেকে ৬৫ টাকায়, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা থেকে ৬৫ টাকায় (মঙ্গলবার দর ছিল ৫৫ টাকা থেকে ৬০ টাকা), পেঁপে ৩০ টাকা থেকে ৩২ টাকায়, দোন্দুল ৬০ টাকা থেকে ৬৫ টাকায় (মঙ্গলবার দর ছিল ৫০ টাকা থেকে ৫৫ টাকা), আলু ২৫ টাকা থেকে ২৬ টাকায়, টমেটো ৯০ টাকা থেকে ১০০ টাকায় (মঙ্গলবার দর ছিল ৮০ টাকা থেকে ৮৫ টাকা) বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে প্রতিকেজি দেশি পিঁয়াজ ৭০ টাকা থেকে ৭৫ টাকায়, বিদেশি পিঁয়াজ ৭৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজারে রসুনের দর অপরিবর্তিত রয়েছে। প্রতিকেজি দেশি রসুন ৭০ টাকা থেকে ৮০ টাকায় এবং আমদানি করা রসুন ১১০ টাকা থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
ক্রেতাদের সঙ্গে আলাপকালে তারা জানান, সরকারের সুষ্ঠু মনিটরিংয়ের অভাবে বাজারে পণ্যের দর ইচ্ছেমতো বাড়াচ্ছে কমাচ্ছে ব্যবসায়িরা। এখন বিদ্যুত ও গ্যাসের দাম বাড়ানোর অজুহাতে জিনিসপত্রের দাম আরেক দফা বাড়ার আশঙ্কা করছেন তারা।
শুক্রবার সকালে যাত্রাবাড়ী কাঁচাবাজারে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত মাসুদ রানা বাজার করছিলেন। আলাপকালে বাংলামেইলকে তিনি বলেন, ‘আসলে সরকার যা ইচ্ছে তাই করছে। হঠাৎ করে বিদ্যুতের দাম বাড়িয়ে দিলো। অথচ দেশের বেকার সমস্যা সমাধান করতে পারছে না। বিদ্যুতের দাম বাড়লে তো আর আমাদের বেতন বাড়বে না। তবে ঠিকই বাড়িভাড়া বাড়বে, বাজারে নিত্য পণ্যের দরে এর প্রভাব পড়বে।’
সেগুনবাগিচা বাজারের ব্যবসায়ী আবদুল বারেক বলেন, ‘দেশে একটার পর ঘটনা ঘটছেই। এতে ব্যবসায়িসহ সাধারণ জনগণ ভালো অবস্থায় নেই। একদিকে নিত্য কাঁচা পণ্যের দরে অস্থিরতা, অন্যদিকে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো। এতো মড়ার উপর খাড়ার ঘা।’
উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, ‘দেখুন দুই দিন আগে মানভেদে প্রতি পাল্লা (৫ কেজি) কাঁচামরিচ ৬৬০ টাকা থেকে ৬৭০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। অথচ শুক্রবার সকালে আড়তে প্রতি পাল্লা কাঁচামরিচ ৮৫০ টাকা থেকে ৯৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।’ আর এভাবে যদি পাইকারি বাজারে দাম ওঠানামা করে তাহলে খুচরা ব্যবসায়িদের কী করার আছে বলুন- প্রশ্ন রাখেন তিনি।
পাইকারি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলাপকালে তারা বলেন, ‘সরকারের নানামুখি তৎপরতায় অসাধু মজুদদাররা পিঁয়াজের দাম কমিয়েছে। তাই বাজারে পিঁয়াজের দর কমতে শুরু করেছেতবেকাঁচাপণ্যের আমদানি কম থাকায় দাম কিছুটা বাড়তি।’
যাত্রাবাড়ী কাঁচাবাজার আড়তের ব্যবসায়ী নেতা নুরু হাজী বলেন, ‘কাঁচাপণ্য আমদানি কম থাকলেই দাম বাড়ে। কয়েকদিন ধরে আমদানি কিছুটা ঘাটতি রয়েছে। তাই মরিচের দাম একটু বেশি। তাছাড়া অন্যান্য যেসব পণ্যের দর বাড়তি রয়েছে অবহাওয়া কিছুদিন স্বাভাবিক থাকলে সেগুলোর দাম কমবে।’
এদিকে বাজারে ডিম, ব্রয়লার মুরগির মাংসের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। খুচরা বাজারে প্রতি হালি ব্রয়লার মুরগির ডিম ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি হালি হাঁসের ডিমের দাম ৪৮ টাকা। এছাড়া বাজারে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগির দাম (সাদা) ১৭০ টাকা থেকে ১৭৫ টাকা এবং ব্রয়লার মুরগি (লাল) ১৮৫ টাকা থেকে ১৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
একুশে সংবাদ ডট কম/ আলম গীর হােসনে/ ২৯.০৮.২০১৫
Link copied!
আপনার মতামত লিখুন :