AB Bank
ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

অর্থ না বুঝে কুরআন পড়লে সওয়াব হবে কি?


Ekushey Sangbad

১১:২৭ এএম, জুলাই ৪, ২০১৫
অর্থ না বুঝে কুরআন পড়লে সওয়াব হবে কি?

একুশে সংবাদ :পবিত্র রমজন মাস ইবাদতের মাস। এ মাসে মুসলমানদের উপর নামাজের পাশাপাশি বেশি বেশি আল-কুরআন তিলাওয়াতের নির্দেষ আছে। কিন্তু আমাদের দেশের মাতৃভাষা বাংলা হওয়ায় অধিকাংশ মানুষই আল কুরআনের আরবি ভাষার অর্থ বুঝে না। এখন প্রশ্ন হলো অর্থ না বুঝলে কুরআন তিলওয়াত করলে কোন সওয়াব পাওয়া যাবে কি না? চলুন এ বিষয়ে বিস্তারিত জেনে নিই।   ২। প্রকৃতপক্ষে এ প্রশ্নটি কুরআন পাঠ থেকে দুরত্ব সৃষ্টির একটি অপকৌশলমাত্র। কেননা এরা তো বাহ্যতঃ মুসলমান। এজন্য তারা কুরআন তিলাওয়াতের প্রতি অনীহা প্রকাশ করতে পারছে না। তারা একথা ভালভাবেই জানে, তিলাওয়াতকে গুরুত্বহীন বলা মাত্রই তাদের বিরূদ্ধে কুফর এর ফতোয়া আসতে পারে। তাই একটা মনগড়া নীতি বানিয়ে নিয়েছে ‘অর্থ না বুঝে তিলাওয়াত করলে কোন লাভ নেই।’   ২। কুরআন হিফাজতের ক্ষেত্রে শব্দাবলির হিফাজতের গুরুত্ব অপরিসীম। তাই অর্থ ব্যতীত শব্দাবলিকেও হিফাজত করা আবশ্যক। আল্লাহ না করুক কোন জালিম লিখিত সমস্ত কুরআন জালিয়ে দিলেও একজন হাফিজে কুরআন তার স্মরণে রক্ষিত কুরআন দ্বারা পুনরায় লিখাতে পারবে। এক্ষেত্রে ছোটো একজন হাফিজ শিশুই যথেষ্ট। বড়দের প্রয়োজ নেই। অভিজ্ঞতায় দেখা যায় শৈশবে কুরআন হিফজ করলে তা মজবুতভাবে স্মৃতিগত হয়; বয়ঃবৃদ্ধির পর হিফজ করলে মুখস্থ অক্ষুন্ন রাখা দুষ্কর হয়ে পড়ে। এখন তাদের কথামত শৈশবে কুরআন শিখানোর প্রচলন বন্ধ করে দিলে পরিণামে দুনিয়া থেকে হাফিজে কুরআনের মহান ধারা বন্ধ হয়ে যাবে। তাই যারা অর্থ না বুঝে তিলাওয়াত করাকে অনর্থক বলে মানুষকে ধোঁকা দেয়ার চেষ্টা করছে তারা স্বয়ং আল্লাহর বিরূদ্ধে লড়াই করছে।   ৩। শব্দের প্রতি রাসূল সা. অত্যধিক গুরুত্ব দিতেন। তাই উম্মতের জন্যও শব্দের প্রতি গুরুত্বারোপ করা কর্তব্য। তিনি শব্দের প্রতি এতো বেশি গুরুত্ব দিতেন যে, ওহী অবতরণকালে হযরত জীবরাঈল আ. এর সাথে দ্রুত আওড়াতেন। অথচ তাঁর স্মরণশক্তি অত্যন্ত প্রখর ছিলো। এ থেকে তাঁর শব্দের প্রতি অসাধারণ আগ্রহ অনুধাবন করা যায়। এ ছাড়া রাসূল সা. এর শব্দের প্রতি এতো ব্যাকুল হওয়ার আর একটি প্রমাণ হলো তিনি নিজে তিলাওয়াতের পাশাপাশি অন্যের তিলাওয়াতও শুনতেন। একবার ইবনে মাসউদ রা.-কে বললেন, আমাকে কুরআন শুনাও। ইবনে মাসউদ রা. বললেন, আমি আপনাকে শুনাব! অথচ আপনার ওপরই কুরআন অবতীর্ণ হয়েছে? নবীজি সা. বললেন, আমি অপরের কাছ থেকে কুরআন শুনতে ভালোবাসি।   ৪। তিলাওয়াতের মাধ্যমে পরকালীন সফলতা অর্জন হয়। তাই ‘অর্থ না বুঝে কুরআন তিলাওয়াত অনর্থক’ মন্তব্য বোকামি বৈ কিছু নয়। অর্থ বুঝার প্রয়োজনীয়তা তো আপনাদের নিকট স্বীকৃত। বর্তমান যুগে মানুষ বিজ্ঞান প্রযুক্তি নির্ভর হওয়ায় এই উত্তরটি নতুন শিক্ষার্থীদের জন্য অতি সহজ একটি দলিল। আর দীনদার লোকদের জন্য সহজবোধ্য আর একটি দলিল আছে। যারা কুরআন হাদীস বুঝতে চায় না তাদের নিকট এ উত্তর বিস্বাদ লাগবে। রাসূল সা. ইরশাদ করেন, কুরআন সহীহশুদ্ধ তিলাওয়াত করলে প্রতি হরফে দশটি করে নেকী লাভ হয়।   ৫। কুরআনের শব্দাবলিই আল্লাহ তাআলার নৈকট্য অর্জন। তাঁর পক্ষ থেকে প্রথমত শব্দাবলিই এসেছে। তারপর অর্থ এসেছে শব্দের অনুগামী হয়ে। এসূত্রেই শব্দাবলি যদি দুর্বোধ্য ভাষায় অবতীর্ণ হতো তবুও সেটাই যথেষ্ট হতো। প্রিয়জনকে খাবারের কিছু দেয়া হলে তাতে দুটি আকর্ষণীয় বস্তু থাকে। একটি প্রেমাষ্পদের হাতের ছোঁয়ার স্বাদ। অপরটি ভক্ষণের স্বাদ। প্রেমের প্রচলিত রীতি অনুসারে প্রিয়জনের হাতের ছোঁয়াযুক্ত বস্তু নাগালে পাওয়াটাই আনন্দের উপলক্ষ্য হয়েদাঁড়ায়।     অনেক সময় প্রিয়জনের স্পর্শমাখা বস্তুটি ব্যবহার না করে স্মৃতিস্বরূপ রেখে দেয়া হয়। অতএব আল্লাহ প্রেমিকদের আনন্দের উপলক্ষ্য হওয়ার জন্য কুরআনের শব্দাবলিই যথেষ্ট ছিলো। কারণ এগুলোই সর্ব প্রথম আল্লাহর সত্তা হতে নির্গত হয়ে অবতীর্ণ হয়। যেন এগুলোর অর্থই ছিলো না। পরে অবশ্য অর্থসহ অবতীর্ণ হওয়ায় দুটি স্বাদ একত্রিত হয়। সুতরাং অর্থের স্বাদ উপভোগের ছুতা দিয়ে শব্দের স্বাদ পরিত্যাগ করা অযৌক্তিক।   উত্তরগুলো দিয়ে হযরত থানভী রহ. ঐসব লোককে সতর্ক করে দিলেন যারা নিজেরা তো কুরআন পড়েই না ওপরন্তু অন্যদেরকেও পড়তে বাঁধা দেয়। কুরআন হচ্ছে আল্লাহর পক্ষ থেকে মুসলমানদের জন্য চিরস্থায়ী সংবিধান। এর মাধ্যমেই সবার জীবন গড়তে হবে। আর কুরআনের জন্য বিশুদ্ধ তিলাওয়াত এমনই এক শক্তি যা যে কোনো মানুষকেই প্রভাবিত করতে সক্ষম। তাইতো মক্কার কাফিররা প্রকাশ্যে কুরআনের বিরোধিতা করলেও রাতের বেলায় রাসূল সা. এর বাড়ির আড়ালে থেকে তাঁর কুরআন তিলাওয়াত শুনতো।       সুতরাং যারা অর্থ না বুঝে কুরআন পড়াকে অনর্থক মনে করে তাদের উচিত কুরআনের ইতিহাস ভালোভাবে অধ্যায়ন করা। এবং না জেনে না বুঝে মুসলমানদেরকে বিভ্রান্তিতে না ফেলা। অন্যথায় আল্লাহর আদালতে জবাবদিহীর জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।   একুশে সংবাদ/এম/ইয়াসমিন/০৪/০৭/১৫
Link copied!