AB Bank
ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

দু’লাখ সরকারি চাকরির ঘোষণা মমতার


Ekushey Sangbad

০৩:৩৩ পিএম, জুলাই ২, ২০১৫
দু’লাখ সরকারি চাকরির ঘোষণা মমতার

একুশে সংবাদ : ১ জুলাই- ভোটের দিকে তাকিয়ে এ বার ঘোষণায় কল্পতরু রাজ্য সরকার। ঠিক সময়ে ভোট হলে হাতে রয়েছে সাকুল্যে আর দশটি মাস। তার আগেই এ দিন ২ লক্ষ সরকারি চাকরি দেওয়ার কথা ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার নবান্নে রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর এই খবর জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন,     রাজ্যে নতুন হাসপাতাল হচ্ছে, স্কুল-কলেজ হচ্ছে। বাড়ছে সরকারি কাজ। অথচ শূন্যপদ অনেক। লোক না-নিলে চলবে কী করে?’’ এক বছরের মধ্যেই নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ হয়ে যাবে বলেও ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। একই সঙ্গে রাজ্যের ১ লাখ ৩০ হাজার সি‌ভিক ভলান্টিয়ারের মাসিক বেতনও ২৮০০ থেকে বাড়িয়ে ৫৫০০ করার কথা বলেছেন তিনি।   তৃণমূল ক্ষমতায় এসেছে চার বছর। তার পর থেকে রাজ্যে কর্মসংস্থানের হিসেব দিতে গিয়ে নানা সময়ে নানা তথ্য দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী-সহ একাধিক মন্ত্রী। যার হিসাব মেলাতে কালঘাম ছুটেছে শীর্ষ আমলাদের। এর ব্যাখ্যা দিয়ে কেউ কেউ জানিয়েছেন, একশো দিনের প্রকল্পে কিছু দিনের জন্য মাটি কাটার কাজ, চুক্তির ভিত্তিতে ঠিকে কাজ, এমনকী বেসরকারি সংস্থায় নিয়োগকেও ‘কর্মসংস্থান’ বলে দেখানো হয়েছে! তাই মন্ত্রীদের কথায় কর্মসংস্থান সব সময়েই লক্ষের অঙ্ক ছাড়িয়েছে।   মুখ্যমন্ত্রী ২ লক্ষ সরকারি চাকরির কথা ঘোষণা করায় তাই স্বচ্ছতার প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা। নবান্নের খবর, চলতি অর্থবর্ষের জন্য বিধানসভায় যে বাজেট গৃহীত হয়েছে, সেখানে ২৩ লক্ষ কর্মসংস্থানের কথা ঘোষণা করা হয়েছে। এর মধ্যে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পে দু’বছরে ১২ লক্ষ লোক কাজ পাবেন।   এই শিল্পে রাজ্যে ৩৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ হচ্ছে বলে দাবি করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর দাবি, গত চার বছরে আড়াই লক্ষ সরকারি চাকরি হয়েছে। এর মধ্যে ১ লক্ষ ৮৫ হাজার নিয়োগ হয়েছে পুলিশ এবং সিভিক ভলান্টিয়ার পদে। বাকি চাকরি হয়েছে প্রাথমিক-মাধ্যমিক শিক্ষক এবং কেরানি পদে।   মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী, আগামী এক বছরের মধ্যে আরও ২ লক্ষ চাকরি হবে। বিরোধীদের প্রশ্ন, কীসের ভিত্তিতে তিনি এই তথ্য দিচ্ছেন! বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র বলেছেন, ‘‘শূন্যপদে নিয়োগ হলে আপত্তির কিছু নেই। কিন্তু টেট কেলেঙ্কারি ও গ্রুপ-ডি পদে নিয়োগে কেলেঙ্কারির পরে স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন ওঠে— এ বারের এই নিয়োগ স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ ভাবে হবে তো?’’ বিজেপি বিধায়ক শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই তৃণমূল নেতারা পাড়ায় পাড়ায় কাউন্টার খুলে ফেলেছেন।   ভোটের আগে ফর্ম ছাপিয়ে তোলাবাজির নতুন পথ দেখালেন মুখ্যমন্ত্রী।’’ মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণায় প্রশাসনের অন্দরমহলেই প্রশ্ন উঠেছে, অর্থের অভাবে যেখানে সরকারি কর্মীদের ৪৮% ডিএ বকেয়া রয়েছে, সেখানে কোন যুক্তিতে নতুন লোক নিয়োগ করে বোঝা বাড়ানো হচ্ছে? অর্থ দফতরের এক কর্তা জানান, চলতি অর্থ বছরের শেষে রাজ্যের ঘাড়ে ঋণের বোঝা দাঁড়াবে প্রায় তিন লক্ষ কোটি টাকা। বেতন-পেনশন খাতে খরচ হবে ৪৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। আরও ২ লক্ষ কর্মচারী নিয়োগ হলে বছরে আরও প্রায় সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকার বোঝা চাপবে। শীর্ষ আমলাদের আশঙ্কা— যদি শেষ পর্যন্ত নিয়োগ হয়ও, সময়মতো বেতন দেওয়া নিয়ে ঘোর সঙ্কটে পড়তে পারে সরকার। প্রশ্ন উঠেছে, লোক নিয়োগের প্রয়োজনীয়তা নিয়েও।     অনেকের মতে, সরকারি অফিসে প্রতিদিন যা কাজ হয়, তা বর্তমান কর্মীসংখ্যাতেই অনায়াসে করে ফেলা যায়। এ প্রসঙ্গে অনেকে বেসরকারি সংস্থার কাজের পরিবেশের কথা টেনে আনছেন। তাঁদের কথায়, সরকারি অফিসে কর্ম-সংস্কৃতি ফেরানোটা বেশি জরুরি। এই কাজটি করতে পারলে এই কর্মীবাহিনী দিয়েই কর্তারা কাজ করিয়ে নিতে পারবেন। কিন্তু শাসক দল এই পথে হাঁটতে রাজি নন। এর জন্য রাজনৈতিক তাগিদই বেশি বলে মনে করছেন আমলাদের একাংশ। সেই কারণেই ভোটের দিকে তাকিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর আজকের ঘোষণা। রাজ্যের কর্মিবর্গ প্রশাসনিক সংস্কার দফতরের এক কর্তা জানান, বেশ কিছু দফতরে শূন্য পদ রয়েছে এটা যেমন ঠিক, তেমনই আবার অনেক দফতরে প্রয়োজনের তুলনায় কর্মীসংখ্যা যথেষ্ট বেশি।   বিভিন্ন দফতরে কর্মীসংখ্যায় ভারসাম্য আনতে বছর কয়েক আগে মুখ্যসচিবের নেতৃত্বে প্রশাসনিক সংস্কার কমিটি কিছু সুপারিশ করেছিল। তা মেনে বেশ কয়েকটি বন্ধ ও রুগ্ণ রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা থেকে বিভিন্ন দফতরে কর্মী পাঠানোর কাজও শুরু হয়েছিল। তার মধ্যেই মুখ্যমন্ত্রীর এ দিনের ঘোষণায় তাই আমলাদের একাংশ বিস্মিত। বিস্ময়ের আরও কারণ রয়েছে। মাত্র দশ মাসের মধ্যে কী ভাবে ২ লক্ষ কর্মী নিয়োগ করা সম্ভব, সেটা ভেবে পাচ্ছেন না আমলারা।     সরকার জানিয়েছে, ২ লক্ষের মধ্যে ৬০ হাজার গ্রুপ-ডি পদে, ৭০ হাজার করণিক বা গ্রুপ-সি মর্যাদার বিভিন্ন পদে এবং ৭০ হাজার নিয়োগ করা হবে শিক্ষক পদে। নবান্নের খবর, সরকারের স্টাফ সিলেকশন কমিটির মাধ্যমে গত তিন বছরে গ্রুপ-সি পদে কমবেশি ৪ হাজার নিয়োগ করা হয়েছে।   এসএসসি সূত্রের দাবি, সরকারি চাকরি দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর থেকে নিয়োগ পর্যন্ত সময় লেগে যায় এক বছরের বেশি। দু’টি লিখিত পরীক্ষা এবং ইন্টারভিউয়ের মাধ্যমে যদি নিয়োগ করতে হয়, তা হলে সময় আরও বেশি লাগে। ফলে যে ৭০ হাজার গ্রুপ-সি কর্মী নিয়োগের কথা বলা হয়েছে, তা এক বছরের মধ্যে শেষ প্রায় অসম্ভব। একুশে সংবাদ/এম/ইয়াসমিন/০২/০৭/১৫
Link copied!