ব্রিটিশ বাংলাদেশি পরিবার নিখোঁজ
একুশে সংবাদ :ব্রিটেনের লুটন শহরে বসবাসকারী বাংলাদেশি এক পরিবারের ১২ জন সদস্য সিরিয়ায় আইএস জঙ্গিদের সঙ্গে যুদ্ধ করতে চলে গেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি তদন্ত করছে ব্রিটিশ পুলিশ। তবে ব্রিটেনে বসবাসরত এ পরিবারের কোনো সদস্যের জঙ্গিদের সঙ্গে জড়িত থাকার তথ্য এর আগে পুলিশের জানা ছিল না।
গত এপ্রিলে পরিবারটি বাংলাদেশে ছুটি কাটাতে গিয়েছিলেন। এরপর ব্রিটেনে রওনা দেয়ার পর তুরস্কে তারা যাত্রাবিরতি করার পর সিরিয়ায় আইএস জঙ্গিদের সঙ্গে যোগ দেয় বলে ধারণা ব্রিটিশ পুলিশের। গত ১৭ মে তাদের লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দরে অবতরণ করার কথা ছিল। এর পর থেকে তাদের কোন সংবাদ পাওয়া যাচ্ছে না।
পরিবারটির সদস্যরা হচ্ছেন, মুহাম্মদ আব্দুল মান্নান (৭৫), তার স্ত্রী মিনারা খাতুন (৫৩), তাদের মেয়ে রাজিয়া খানম (২১), পুত্র মোহাম্মদ জায়েদ হুসেইন (২৫), মোহাম্মদ তৌফিক হুসেইন (১৯), মোহাম্মদ আবিল কাশেম সাকার (৩১), তার স্ত্রী সাইদা খানম (২৭), মোহাম্মদ সালেহ হুসেইন (২৬), তার স্ত্রী রোশনারা বেগম (২৪) এবং এ দম্পতির তিন সন্তান যাদের বয়স ১ থেকে ১১ বছর।
স্বজনরা বলছেন, পরিবারটির নারী, শিশু ও বৃদ্ধসহ সবাই আইএস জঙ্গিদের সঙ্গে যুদ্ধ করতে গেছে যা তাদের মোটেও বিশ্বাস হচ্ছে না। তাদের আচরণে কখনো এ ধরনের জিহাদি মনোভাব ছিল না,তাই এ পরিবারের খোঁজ পেতে স্বজনরা পুলিশের কাছে তদন্তের আবেদন জানিয়েছেন। এক বিবৃতিতে স্বজনরা এক বলেছেন পরিবারটির সবাইকে হারিয়ে প্রচণ্ড উদ্বেগের মধ্যে রয়েছে।
এদিকে বেডফোর্ডশায়ারের পুলিশ বলছে, তাদের ধারণা বাংলাদেশি এ পরিবারটি ছুটি কাটানোর পর বাংলাদেশ থেকে তুরস্কে যাত্রা বিরতি করে সেখান থেকে সিরিয়ায় ঢুকে পড়ে। এরপর আইএস জঙ্গিদের সঙ্গে যোগ দেয়। তবে বেডফোর্ডশায়ার পুলিশ এখনো পুরোপুরি নিশ্চিত নয় যে পরিবারটি সিরিয়া সীমান্ত অতিক্রম করেছে কি না।
পুলিশ বলছে গত ১০ এপ্রিল লন্ডনের হিথরো বিমানবন্দর থেকে ইস্তাম্বুল হয়ে পরিবারটি বাংলাদেশে ছুটি কাটাতে আসে। পরিবারটি সিরিয়ায় যেয়ে থাকতে পারে এধরনের সন্দেহ খতিয়ে দেখছে পুলিশ। ব্রিটেনে বসবাসরত পরিবারটির স্বজনদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। এছাড়া স্বজনদের এক বিবৃতিতে যদি কেউ পরিবারটির কোনো হদিস পায় তা পুলিশকে জানাতে অনুরোধ করা হয়েছে।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে মুহাম্মদ মান্নান ডায়াবেটিসে এবং তার স্ত্রী মিনারা খাতুন ক্যান্সার আক্রান্ত। পুলিশের কাছে মুহাম্মদ মান্নানের আগের পক্ষের এক সন্তান যিনি ব্রিটেনের লুটনে থাকেন তিনি এ পরিবারটির লাপাত্তায় উদ্বিগ্ন হয়ে পুলিশের শরণাপন্ন হয়েছেন।
উল্লেখ্য, ১২ সদস্যের জিহাদে যোগদান নিয়ে বিশ্বস্ত এক সূত্র নিশ্চিত করেছে ইস্তাম্বুল থেকে সিরিয়া যাওয়ার পরই পরিবারের এক নারী সদস্য ব্রিটেনে তার এক বোনের সঙ্গে যোগাযোগ করে। পরিবারের বড় ছেলে সাকা পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী পুরো পরিবারকে প্রায় জিম্মি করে সিরিয়া নিয়ে গেছে বলে সূত্র জানিয়েছে।
একুশে সংবাদ/এম/ইয়াসমিন/০২/০৭/১৫
Link copied!
আপনার মতামত লিখুন :